মুনিরীয়া তরিক্বতপন্থীদের ফের অবস্থান, রাউজানে ঝাড়ু–মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ

মুনিরীয়া তরিক্বতপন্থীদের ফের অবস্থান, রাউজানে ঝাড়ু–মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ

রাউজান প্রতিনিধি।

।মুনিরীয়া ইস্যুতে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের রাউজান। বুধবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কাগতিয়া দরবার ও মুনিরীয় তরিক্বতের পীরের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজলা আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ রাউজানে মুনিরীয়া বিরোধীরা।

নানা অপকর্মের দায়ে বিতারিত হওয়া পীর ও তার অনুসারীদের অবস্থানের প্রতিবাদে সমাবেশ, ঝাড়– মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃত্ব দেন রাউজান উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনেয়ারুল ইসলাম।

তার নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ওছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে অংশগ্রহণকারীরা  বিশাল ঝাড়– মিছিল বের করে।

  জানা যায়,  ১৪ বছরের কিশোর নঈম উদ্দিনকে হত্যা এবং মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ নেতাসহ অসংখ্য আলেম ওলামার ওপর হামলা এবং সর্বশেষ গত ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল হক ও মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আনোয়ারের ওপর হামলার প্রতিবাদের মুখে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে মুনিরীয়ার পীর মুনির উল্লাহসহ তরিক্বতপন্থীরা এলাকা ছাড়া ছিল।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হঠাৎ করে রাউজানের কাগতিয়া গ্রামে মুনিরীয়া তরিক্বতপন্থীরা গণজামায়েত হন। গতকাল বুধবার সকালে তাদের অবস্থানের বিষয়টি রাউজানে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ রাউজানের প্রথমে মুন্সিরঘাটাস্থ দলীয় কার্যালয়ে পরে মুন্সিরঘাটাস্থ মাস্টার দা সূর্যসেন চত্বরে জড়ো হন।

সেখানে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। পরে তারা দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেয়। দুপুর ২টার মধ্যে এলাকা ছেড়ে না গেলে কাগতিয়া ঘেরাও কর্মসূচীর ঘোষণা দেন তারা। এদিকে গণজামায়েতের অনুমতি না নেওয়ায় রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল, রাউজান থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা কাগতিয়া গ্রামে গেলে অনুমতি না নেওয়ার কথা স্বীকার করে তারা রাউজান থেকে চলে যান।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘ ‘মুনিরীয়া তরিক্বতপন্থীরা অতর্কিতভাবে রাউজানে প্রবেশ করেছে। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তিনশত তরিক্বতপন্থীকে নিয়ে জেয়ারত করতে এসেছিল।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তাদের জেয়ারত কর্মসূচী বাতিল করার অনুরোধ করলেও তারা জেয়রাত শেষ করে কাগতিয়া ত্যাগ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, গত ১২ই রবিউল আওয়াল তারা রাউজানে মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিলের অনুমতি চেয়েছিল, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুমতি দেয়নি।’ এই প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, মঙ্গলবার রাতে মুনিরীয়া তরিক্বতপন্থ ড. আবুল মনছুরের নেতৃত্বে কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়।

করোনা পরিস্থিতিতে গণজামায়েত নিষেধ, অথচ তারা অনুমতি নেয়নি। তারা (মুনিরীয়া তরিক্বত পন্থীরা) বলছে পীর মুনির উল্লাহর বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তারা কবর জেয়ারত করতে এসেছিল। এএসপি, এসিল্যান্ড এবং ওসিকে নিয়ে আমি সেখানে গিয়ে তারা অনুমতি আছে কিনা তা জানতে চাইলে তারা অনুমতি না নেওয়ার কথা স্বীকার করে মাজার প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন।

কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে তারা চলে যান। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাউজানের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিক্ষোভ সমাবেশে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুনিরীয়া তরিক্বত বিরোধীরাও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

অপর দিকে পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের মগদাই বাজার এলাকায় স্থানীয় চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে মুনিরীয়া বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই ভাবে নোয়াপাড়া চৌমুহনীতে বিক্ষোভ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

তারা অবিলম্বে মুনিরীয়া তরিক্বত পন্থীদের রাউজান ত্যাগের আহবান জানান। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে কাগতিয়া এলাকায় মোটর সাইকেল মোহড়া দিয়েছেন বিনাজুরী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ছৈয়দ আলমগীর মুন্সির নেতৃত্বে।

এসময় কাগতিয়া দরবারে প্রবেশের প্রধান ফটকে পুলিশ অবস্থান করছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাগতিয়া দরবারে প্রবেশ মূখ কাগতিয়া মাদ্রাসার সামনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। ঐ সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের তল্লাসী ও জিজ্ঞেসা করছেন পুলিশ। এ রিপোট লেখা পষর্ন্ত কাগতিয়া পীরের আস্তানায় অবস্থানরত তরিক্বতপন্থীরা চলে যাওয়ার কথা কেউ নিশ্চিত করতে পারে নাই।

আপনি আরও পড়তে পারেন